দ্রুত গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় । গলা ব্যাথা কমাতে যা যা করা উচিত।

By G. Kibria

Published on:

দ্রুত গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়,গলা ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক উপায়,

গলা ব্যথা আমাদের সবার কাছেই পরিচিত একটা সমস্যা। ঠান্ডা লাগলে, জ্বর হলে, এমনকি বেশি জোরে কথা বললেও গলা ব্যথা করতে পারে। এতে খাবার গিলতে, কথা বলতে, এমনকি শ্বাস নিতেও কষ্ট হতে পারে। বেশিরভাগ সময় এই ব্যথা এমনিতেই সেরে যায়, কিন্তু মাঝে মাঝে এটা বেশ ভোগায়। তখন মনে হয়, “ইস! যদি তাড়াতাড়ি এই ব্যথাটা কমানো যেত!”। চিন্তার কিছু নেই, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কীভাবে ঘরোয়া উপায়েই এই সমস্যার সমাধান করা যায়।

এই আর্টিকেলে আমরা গলা ব্যথার কারণ, ঘরোয়া সমাধান, কী খাওয়া উচিত, কী করা উচিত না, সেই সবকিছু নিয়ে আলোচনা করব। যারা ঘন ঘন গলা ব্যথার সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্যেও থাকছে কিছু দরকারি টিপস। মনে রাখবে, এখানে দেওয়া উপায়গুলো সাধারণত কাজ করে, তবে যদি তোমার অন্য কোনো অসুখ থাকে বা ব্যথা খুব বেশি হয়, তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে দেরি করবে না। এই লেখাটা পড়ে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে তোমার কী করা উচিত, আর কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার।

গলার ব্যথা বুঝার উপায়

গলা ব্যথা হয়েছে কিনা, সেটা বোঝা খুব কঠিন কিছু নয়। কয়েকটা লক্ষণ দেখলেই বোঝা যায়।নিচের কিছু লক্ষণগুলো থেকেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে আপনার গলা ব্যথা হয়েছে কিনা যেমন:

গলার ভেতরে অস্বস্তি

গলা ব্যথার একেবারে শুরুতে, গলার ভেতরে একটা শুকনো ভাব (Dryness) অনুভব হতে পারে। মনে হতে পারে যেন কিছু একটা আটকে আছে, বা বারবার গলা পরিষ্কার করার প্রয়োজন হচ্ছে। অনেক সময় গলায় হালকা চুলকানিও (Itching) হতে পারে। এই অস্বস্তিটা ক্রমাগত বাড়তে থাকে।

কিছু গিলতে গেলে ব্যথা

গলা ব্যথার এটা একটা প্রধান লক্ষণ। খাবার, পানীয়, এমনকি নিজের লালা গিলতেও (Swallowing) কষ্ট হতে পারে। মনে হতে পারে যেন গলার ভেতরটা সরু হয়ে গেছে, আর কিছু গিললেই কাঁটা লাগছে। এই ব্যথা হালকা থেকে তীব্র (Severe) হতে পারে।

গলা ফুলে যাওয়া

অনেক সময় গলার গ্রন্থিগুলো (Glands), যাকে আমরা টনসিল (Tonsils) বলি, সেগুলো ফুলে যায়। বাইরে থেকে দেখলে বা হাত দিয়ে স্পর্শ করলে ফোলাভাব বোঝা যায়। এই ফোলাভাবের কারণে ব্যথা আরও বাড়তে পারে।

গলার স্বর পরিবর্তন

গলা ব্যথার কারণে গলার স্বর (Voice) বদলে যেতে পারে। আওয়াজ ফ্যাসফেসে শোনাতে পারে, বা কথা বলতে অসুবিধা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে গলার স্বর একেবারে বসেও (Hoarseness) যেতে পারে।

শুকনো কাশি হওয়া

গলা ব্যথার সাথে শুকনো কাশি (Dry cough) হতে পারে। এই কাশিতে কফ বের হয় না, কিন্তু গলার ভেতরের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেয়। বারবার কাশি হলে গলার পেশিতে টান লাগতে পারে। গলা ব্যথা ও কাশির ঔষধের নাম জানার আগে, প্রচুর পরিমাণে জল পান করে এবং বিশ্রাম নিয়ে দেখতে পারেন।

জ্বর হওয়া

ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের (Infection) কারণে গলা ব্যথা হলে, সাথে জ্বর (Fever) আসতে পারে। জ্বর হালকা (১০১° ফারেনহাইট-এর নিচে) বা বেশি (১০১° ফারেনহাইট-এর উপরে) হতে পারে। গলা ব্যথার ঔষধ এন্টিবায়োটিক দরকার হবে কিনা, তা ডাক্তার পরীক্ষা করে জানাবেন।

শরীর দুর্বল লাগা

গলা ব্যথার সাথে সাথে শরীর দুর্বল (Weakness) লাগতে পারে, ক্লান্তি (Fatigue) আসতে পারে। কোনো কাজ করতে ইচ্ছে নাও করতে পারে। এটা সাধারণত সংক্রমণের কারণে হয়।

গলায় ঘা এর লক্ষণ

গলায় ঘা (Ulcer) হলে ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে। গলার ভেতরে সাদা বা হলুদ দাগ দেখা যেতে পারে, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে, এবং খাবার গিলতে খুব কষ্ট হতে পারে। গলায় ঘা হলে কি ওষুধ খেতে হবে, সেটা জানার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

এই লক্ষণগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। কারো হয়তো অল্প একটু খুসখুসে ভাব, আবার কারো এতো বেশি ব্যথা যে কথা বলাই মুশকিল। যদি দেখো এই লক্ষণগুলো তোমার মধ্যে আছে, আর ২-৩ দিনেও ঘরোয়া উপায়ে কমছে না, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাও। বিশেষ করে গলায় ঘা এর লক্ষণ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

দ্রুত গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

গলা ব্যথা কমানোর জন্য বাড়িতেই অনেক কিছু করতে পারো। নিচের কাজগুলো আপনরা করতে পারলে আপনারা সহজেই অন্যের সাহায্য ছাড়া খুব সহজেই গলার ব্যথা কমাতে পারেন। কয়েকটা সহজ আর কাজের উপায় বলা হলো হলো

লবণ-গরম জল দিয়ে গার্গল

এটা হয়তো তোমরা অনেকেই জানো। এক গ্লাস হালকা গরম জলে আধা চা-চামচ লবণ মিশিয়ে নাও। এই জল দিয়ে দিনে ৩-৪ বার গার্গল করো। লবণ-জল গলার ভেতরের ফোলা কমায়, জীবাণুও মারে। দ্রুত গলা ব্যাথা কমানোর উপায় হিসেবে এটা দারুণ কাজের।

মধু খাওয়া

মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। এটা গলাকে নরম রাখে, ব্যথাও কমায়। এক চা-চামচ মধু এমনি খেতে পারো, অথবা গরম জলে বা চায়ের সাথে মিশিয়েও খেতে পারো। গলা ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে মধু খুবই উপকারী।

আদা দেওয়া চা খাওয়া

আদা-চা গলা ব্যথার জন্য খুব ভালো। আদাতে এমন কিছু জিনিস আছে যা গলার ফোলা কমায়। এক কাপ জলে আদার টুকরো দিয়ে ফুটিয়ে, ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে খাও। দ্রুত গলা ব্যাথা কমানোর উপায় হিসেবে এটা ব্যবহার করে দেখতে পারো।

লেবুর রস

লেবুর রসে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। হালকা গরম জলে লেবুর রস আর মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবে।

রসুন

রসুনে অ্যালিসিন নামে একটা জিনিস থাকে, যা জীবাণু ধ্বংস করে। রসুন কাঁচা খেতে পারো, তরকারিতে দিয়েও খেতে পারো।রসুনে যেহেতু এন্টিবায়োটিক থাকে।প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক খেলে আপনার গোলা ব্যথা সহজেই কমে যেতে পারে

গরম জলের ভাপ

গরম জলের ভাপ নিলে নাক আর গলার ভেতরের পথ পরিষ্কার হয়। একটা বড় পাত্রে গরম জল নিয়ে, মাথায় তোয়ালে চাপা দিয়ে ভাপ নাও। এটাও গলা ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক উপায়

ক্যামোমাইল চা

ক্যামোমাইল চায়ে এমন কিছু উপাদান আছে, যা গলা ব্যথা কমাতে পারে।কামোমাইল চা অনেক উপকারী একটি চা।সাধারণ লাল চা এর থেকে অনেক অনেক উপকারী। আপনি এই চা কিনতে চাইলে নিকটস্থ মার্কেট থেকে কিন নিতে পারেন।

তুলসী পাতা

তুলসী পাতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কয়েকটি তুলসী পাতা গরম জলে ফুটিয়ে সেই জল পান করলে আরাম পাবে।তুলসী পাতা শুধু সৌন্দর্যের জন্যই না।এটি একটি গলার ব্যথার প্রধান উপশমকারী উপাদান

এই উপায়গুলো নিয়মিত করলে দ্রুত গলা ব্যথা কমানোর উপায় হিসেবে খুব ভালো কিছু ফলাফল পাওয়া যায়।

গলার ব্যথার জন্য কি খাওয়া উচিত

গলা ব্যথা হলে কী খাচ্ছ, সেটাও খুব জরুরি। এমন খাবার খেতে হবে, যা গলায় আরও জ্বালা করবে না, বরং আরাম দেবে। এখানে কিছু খাবারের কথা বলা হলো:

  • নরম খাবার: শক্ত খাবার গিলতে গেলে গলায় লাগবে। তাই নরম খাবার খাও, যেমন – জাউ ভাত, নরম খিচুড়ি, সেদ্ধ সবজি, সুজি, পুডিং, দই।
  • তরল খাবার: বেশি করে স্যুপ, ডাল, ফলের রস, ডাবের জল খাও। এতে শরীর জল পাবে, গলার শুকনো ভাবটাও কমবে।
  • ভিটামিন সি যুক্ত খাবার: ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কমলালেবু, আনারস, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, ব্রকলি – এইসব ফল আর সবজি খাও।
  • প্রোটিন যুক্ত খাবার: প্রোটিন শরীরের ভেতরের ক্ষয় পূরণ করে। ডিম, মুরগির মাংস, মাছ – এগুলো নরম করে রান্না করে খাও।
  • কলা: কলা নরম, তাই গলা ব্যথা হলে খেতে পারো। এতে পটাশিয়ামও থাকে, যা শরীরের জন্য দরকারি।

এই খাবারগুলো শুধু গলার জন্যই ভালো না, এগুলো পুরো শরীরের জন্যই উপকারী। গলা ব্যথা হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত – এই চিন্তার আগে এই খাবারগুলো খেয়ে দেখতে পারো।

গলার ব্যথার কারণ কি

গলা ব্যথা কেন হয়, সেটা জানলে সমস্যা এড়ানো সহজ হয়। এখানে কয়েকটা কারণ বলা হলো:

  • ভাইরাস সংক্রমণ: এটাই গলা ব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ। ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু হলে গলা ব্যথা হতে পারে।
  • ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: স্ট্রেপটোকক্কাস (Streptococcus) নামে একটা ব্যাকটেরিয়ার জন্য গলায় ইনফেকশন হতে পারে, যাকে বলে স্ট্রেপ থ্রোট (Strep throat)। এতে খুব ব্যথা হয়।
  • অ্যালার্জি: ধুলা, পশুপাখির লোম, ফুলের রেণু – এইসব থেকে অ্যালার্জি হলে গলা ব্যথা হতে পারে।
  • শুকনো হাওয়া: শীতকালে হাওয়া শুকনো থাকে, তাই গলার ভেতরটাও শুকিয়ে গিয়ে ব্যথা করতে পারে।
  • ধূমপান: যারা সিগারেট খায়, তাদের গলায় সমস্যা বেশি হয়।
  • জোরে কথা বলা: অনেকক্ষণ ধরে জোরে কথা বললে বা চিৎকার করলে গলার পেশিতে টান পড়ে।
  • পেটের অ্যাসিড ওপরে উঠে আসা (GERD): যাদের এই সমস্যা আছে, তাদের পেটের অ্যাসিড গলায় উঠে এসে জ্বালা ধরায়।
  • কেমিক্যাল: কিছু কেমিক্যাল-এর সংস্পর্শে এলে গলা জ্বালা করতে পারে।

গলায় ঘা এর ঘরোয়া চিকিৎসা

গলায় ঘা হলে খুব কষ্ট হয়। এখানে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসার কথা বলা হলো, যা তুমি চেষ্টা করে দেখতে পারো:

  • হলুদ: হলুদে এমন জিনিস আছে, যা ঘা শুকোতে সাহায্য করে। গরম দুধে আধা চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারো। গলায় ঘা হলে ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে এটা অনেকেই ব্যবহার করে।
  • মেথি: মেথি ভিজানো জল খেলে গলার ঘায়ে আরাম পাওয়া যায়। এক চা-চামচ মেথি বীজ জলে ভিজিয়ে রেখে, সেই জলটা ছেঁকে নিয়ে খাও।
  • আপেল সিডার ভিনেগার: এটাতে জীবাণু মারার ক্ষমতা আছে। এক গ্লাস হালকা গরম জলে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে গার্গল করো।
  • নুন জল: নুন জল দিয়ে গার্গল করা গলায় ঘা হলে ঘরোয়া চিকিৎসা – এটা বহু পুরনো উপায়।
  • বেকিং সোডা: বেকিং সোডা দিয়ে গার্গল করলেও গলায় ঘা এর লক্ষণ কমে।

এই ঘরোয়া চিকিৎসাগুলো গলার ঘা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, ঘা যদি না কমে বা অন্য কোনো সমস্যা হয়, তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

গলা ব্যাথা শুরুর আগে ব্যথা বন্ধ করার উপায় কি

গলা ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই যদি কিছু নিয়ম মেনে চলো, তাহলে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবে। এখানে কয়েকটা উপায় বলা হলো:

  • প্রচুর জল খাও: শরীরকে জলশূন্য হতে দিয়ো না। এতে গলার ভেতরটা শুকনো হবে না।
  • সিগারেট খাবে না: সিগারেট খেলে গলায় নানা রকম সমস্যা হয়।
  • অ্যালার্জি থেকে বাঁচো: যদি তোমার কোনো কিছুতে অ্যালার্জি থাকে, সেগুলো থেকে দূরে থাকো।
  • হাত ধোবে: বাইরে থেকে এসে বা খাবার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নেবে। এতে জীবাণু ছড়াবে না।
  • বিশ্রাম নাও: ঠিক মতো বিশ্রাম নিলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকে।
  • ভালো খাবার খাও: পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীর ভালো থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
  • ব্যায়াম করো: নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে গলা ব্যথার সমস্যা অনেক কম হবে।

গলার ব্যথা উপশমে কি কি করা উচিৎ নয়

গলা ব্যথা হলে কিছু কাজ একদমই করা উচিত না। এগুলো করলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে:

  • চিৎকার বা জোরে কথা না বলা: এতে গলার পেশিতে চাপ পড়ে, ব্যথা বাড়ে।
  • ধূমপান না করা: ধূমপান গলার ভেতরের অংশকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  • অ্যালকোহল পান না করা: অ্যালকোহল শরীরকে শুষ্ক করে দেয়, এতে গলার ব্যথা বাড়তে পারে।
  • খুব গরম বা ঠান্ডা খাবার না খাওয়া: খুব গরম বা খুব ঠান্ডা খাবার গলার জন্য ভালো নয়।
  • মশলাদার খাবার না খাওয়া: মশলাদার খাবার গলার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।
  • টক জাতীয় খাবার: টক জাতীয় খাবার যেমন – লেবু, তেঁতুল, ভিনেগার ইত্যাদি বেশি পরিমানে খাওয়া উচিত না।
  • শুকনো খাবার: শুকনো খাবার, যেমন – বিস্কুট, চানাচুর এগুলো গিলতে কষ্ট হতে পারে।

এই জিনিসগুলো না করলে গলা ব্যথা তাড়াতাড়ি সেরে উঠবে।

প্রাকৃতিকভাবে গলা ব্যথা কমানোর উপায়

প্রাকৃতিকভাবে গলা ব্যথা কমানোর অনেকগুলো উপায় রয়েছে। এই উপায়গুলো সহজলভ্য, নিরাপদ এবং কার্যকরী। নিচে কয়েকটি উপায় আলোচনা করা হলো:

  • জলীয় উপাদান গ্রহণ : প্রথমে, প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। এটি আপনার শরীরকে আর্দ্র রাখবে এবং গলার শুষ্কতা কমাবে। এর ফলে ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কম অনুভূত হবে।
  • লবণ-জল দিয়ে গার্গল : গরম জলে লবণ মিশিয়ে গার্গল করা একটি অত্যন্ত প্রাচীন এবং কার্যকরী পদ্ধতি। লবণ জল গলার প্রদাহ কমায় এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি দ্রুত গলা ব্যাথা কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম।
  • মধু : মধু আরেকটি চমৎকার প্রাকৃতিক উপাদান। এটি গলার ভেতরের অংশকে মসৃণ রাখে এবং ব্যথা কমায়। আপনি সরাসরি মধু খেতে পারেন অথবা গরম জল বা চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
  • আদা চা : আদা চা গলা ব্যথার জন্য খুবই উপকারী। আদার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ রয়েছে, যা গলার ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • লেবু ও গরম জল : লেবুর রস ও গরম জল একসাথে মিশিয়ে পান করলেও উপকার পাওয়া যায়। লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • লবঙ্গ: লবঙ্গ চিবিয়ে রস খেলে অথবা লবঙ্গ মেশানো চা পান করলেও উপকার পাওয়া যায়। লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অ্যানালজেসিক (ব্যথানাশক) এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ।
  • দারুচিনি : দারুচিনি মেশানো চা-ও পান করতে পারেন। দারুচিনিতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান।
  • মেন্থল : মেন্থল যুক্ত লজেন্স বা ক্যান্ডি চুষলে গলা ঠান্ডা থাকে এবং সাময়িক আরাম পাওয়া যায়।
  • ভেষজ উপায় যদি আপনি ভেষজ উপায়ে আরাম পেতে চান, তাহলে তুলসী পাতা বা বাসক পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো

গলার ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ

বেশিরভাগ সময় গলা ব্যথা এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু কয়েকটা ব্যাপার থাকলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার। যেমন:

  • খুব বেশি ব্যথা: যদি ব্যথা খুব বেশি হয়, আর ঘরোয়া উপায়ে না কমে।
  • শ্বাস নিতে কষ্ট: শ্বাস নিতে কষ্ট হলে বা দম বন্ধ হয়ে আসার মতো হলে।
  • গিলতে অসুবিধা: খাবার বা জল গিলতে খুব বেশি অসুবিধা হলে।
  • জ্বর: যদি গলা ব্যথার সাথে অনেক জ্বর থাকে।
  • কানে ব্যথা: গলা ব্যথার সাথে কানে ব্যথা হলে।
  • ফুসকুড়ি: গলা ব্যথার সাথে শরীরে যদি ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
  • এক সপ্তাহের বেশি ব্যথা: যদি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গলা ব্যথা থাকে।
  • গলায় ইনফেকশনের লক্ষণ থাকলে।

ডাক্তার তোমাকে পরীক্ষা করে দেখবেন, দরকার হলে ঔষধ দেবেন। গলা ব্যথার ঔষধ এন্টিবায়োটিক লাগতে পারে, যদি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকে। গলা ব্যথা ও কাশির ঔষধের নাম ডাক্তারই তোমাকে বলে দেবেন। ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ নাম ও ডাক্তার বলে দেবেন।

লেখকের শেষ কথা

গলা ব্যথা সাধারণ সমস্যা হলেও, এটা খুব বিরক্তিকর। এই আর্টিকেলে যেসব ঘরোয়া উপায়ের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো মেনে চললে তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবে, যদি ব্যথা বেশি হয় বা অনেক দিন ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবে। তোমার সুস্থ থাকাই আমাদের কাম্য।আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয় ছিল দ্রুত গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়,গলা ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক উপায়।আসা করি আজকে আমরা আপনাদের ভালো করে বুঝাতে পেরেছি।

যেকোনো তথ্যের আপডেট সবার আগে জানার জন্য উত্তর বিডির সোসাল একাউন্টগুলো অনুসরণ করুন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ফেসবুক পেজFollow Us
হোয়াটসএপJoin us
ইন্সটাগ্রামJoin us
মিডিয়ামJoin us

1 thought on “দ্রুত গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় । গলা ব্যাথা কমাতে যা যা করা উচিত।”

Leave a Comment