প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব নিদর্শন হলো টাঙ্গুয়ার হাওর। সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত এই বিশাল জলাভূমি প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। বর্ষাকালে যখন চারদিক পানিতে টইটুম্বুর হয়ে থাকে, তখন টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য্য দেখার মতো। নীল আকাশের নিচে জলরাশি, সবুজ গাছপালা, নানা রকমের পাখি আর মাছ— সব মিলে যেন এক স্বপ্নের রাজ্য!
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের জন্য হাউসবোট এবং নৌকা ভাড়া করা যায়। হাউসবোটে থাকার সুব্যবস্থা থাকে, যেখানে আপনি আরামে রাত কাটাতে পারবেন। আবার নৌকা ভাড়া করে হাওরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখতে পারবেন। এই লেখায় আমরা টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট ভাড়া ও টাঙ্গুয়ার হাওর নৌকা ভাড়া ২০২৫ ও টাঙ্গুয়ার হাওরের দর্শনীয় স্থান, টাঙ্গুয়ার হাওর সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করবো।
টাঙ্গুয়ার হাওর
টাঙ্গুয়ার হাওর কেবল একটি জলাভূমি নয়, এটি একটি অনন্য জীববৈচিত্র্যের আধার। এখানে অসংখ্য প্রজাতির মাছ, পাখি, উদ্ভিদ এবং অন্যান্য জীব বাস করে। হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য এটিকে ১৯৯৯ সালে রামসার স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
হাওরের অভ্যন্তরে রয়েছে নানা আকৃতির ছোট-বড় নদী, খাল এবং বিল। বর্ষাকালে হাওর পানিতে ভরে গেলে এই নদী, খাল এবং বিলগুলো এক অপরূপ রূপ ধারণ করে। শীতকালে হাওরে অসংখ্য অতিথি পাখির আগমন ঘটে, যা পাখি প্রেমীদের কাছে একটি অসাধারণ পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিত।
টাঙ্গুয়ার হাওর কোথায় অবস্থিত?
টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। এটি ধর্মপাশা এবং তাহিরপুর উপজেলার অন্তর্গত। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ যাওয়ার জন্য বাস ও ট্রেন সেবা চালু রয়েছে। সুনামগঞ্জ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে হয় নৌকা অথবা হাউসবোট যোগে।
টাঙ্গুয়ার হাওরের বর্তমান অবস্থা
টাঙ্গুয়ার হাওর বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক এই হাওর ভ্রমণে আসেন। তবে পর্যটনের কারণে হাওরের পরিবেশ ও প্রকৃতি কিছুটা হুমকির মুখে পড়েছে।
প্লাস্টিক দূষণ, অবৈধ মাছ শিকার ইত্যাদি হাওরের জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও স্থানীয় মানুষের জীবিকার উপর ও এর প্রভাব পড়ছে। তাই হাওরের পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।পাশাপশি পর্যটকদের সাবধানকরতে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে
টাঙ্গুয়ার হাওর এর সেরা ২০ টি হাউসবোট
MV নীলাদ্রি: এই হাউসবোটটি বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা সহ একটি বড় হাউসবোট। এটিতে ৩০ জন পর্যন্ত অতিথি থাকতে পারে। এতে এয়ার কন্ডিশনার, বিছানা, টয়লেট, বাথরুম, খাবারের ব্যবস্থা এবং বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।
২. MV স্বর্ণদ্বীপ: এটি একটি মাঝারি আকারের হাউসবোট যেখানে ২০ জন পর্যন্ত অতিথি থাকতে পারে। এতে আরামদায়ক বিছানা, টয়লেট, বাথরুম এবং খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
৩. MV মেঘবালিকা: এটি একটি ছোট হাউসবোট যেখানে ১০ জন পর্যন্ত অতিথি থাকতে পারে। এটি পরিবার এবং বন্ধুদের ছোট গ্রুপের জন্য উপযুক্ত।
৪. MV সবুজ দ্বীপ: এই হাউসবোটটি এর সুন্দর অভ্যন্তর সজ্জা এবং আরামদায়ক সুযোগ-সুবিধার জন্য পরিচিত।
৫. MV নীল আকাশ: এই হাউসবোটটি এর বড় ডেক এবং সুন্দর দৃশ্যের জন্য জনপ্রিয়।
৬. MV সোনার তরী: এই হাউসবোটটি এর বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা এবং অসাধারণ পরিবেশের জন্য পরিচিত।
৭. MV হাওর রানী: এই হাউসবোটটি এর আরামদায়ক বিছানা এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য জনপ্রিয়।
৮. MV টাঙ্গুয়ার স্বপ্ন: এই হাউসবোটটি এর সুন্দর অভ্যন্তর ডিজাইন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ কর্মীদের জন্য পরিচিত।
৯. MV নীলকান্ত: এই হাউসবোটটি এর বিশাল আকার এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার জন্য জনপ্রিয়।
১০. MV হাওর বালিকা: এই হাউসবোটটি এর সুন্দর দৃশ্য এবং শান্ত পরিবেশের জন্য পরিচিত।
১১. MV সবুজ পাতা: এই হাউসবোটটি এর ভালো অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য জনপ্রিয়।
১২. MV নীল পদ্ম: এই হাউসবোটটি এর আরামদায়ক বিছানা এবং সুন্দর অভ্যন্তর সজ্জার জন্য পরিচিত।
১৩. MV হাওর তরঙ্গ: এই হাউসবোটটি এর বিশাল ডেক এবং সুন্দর দৃশ্যের জন্য জনপ্রিয়।
১৪. MV সোনার কন্যা: এই হাউসবোটটি এর বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা এবং অসাধারণ সেবার জন্য পরিচিত।
১৫. MV হাওর ময়ূরী: এই হাউসবোটটি এর আরামদায়ক বিছানা এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য জনপ্রিয়।
১৬. MV টাঙ্গুয়ার রত্ন: এই হাউসবোটটি এর সুন্দর অভ্যন্তর ডিজাইন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ কর্মীদের জন্য পরিচিত।
১৭. MV নীল সাগর: এই হাউসবোটটি এর বিশাল আকার এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার জন্য জনপ্রিয়।
১৮. MV হাওর কুমারী: এই হাউসবোটটি এর সুন্দর দৃশ্য এবং শান্ত পরিবেশের জন্য পরিচিত।
১৯. MV সবুজ বন: এই হাউসবোটটি এর বন্ধুত্বপূর্ণ কর্মী এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য জনপ্রিয়।
২০. MV নীল আকাশ: এই হাউসবোটটি এর আরামদায়ক বিছানা এবং সুন্দর অভ্যন্তর সজ্জার জন্য পরিচিত।
টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট বুকিং এর জন্য আপনি অনলাইনে অথবা স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। হাউসবোট ভাড়া সুনামগঞ্জ এ পেতে হলে আপনার ভ্রমণের তারিখ, অতিথির সংখ্যা এবং পছন্দের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ
টাঙ্গুয়ার হাওর এর সেরা ৫ টি বিলাসবহুল হাউসবোট
টাঙ্গুয়ার হাওরে অনেক ধরনের হাউসবোট রয়েছে।তারমধ্যে আমাদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী নিচে কয়েকটি হাউজবোট সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হলো:
MV নীলাদ্রি:
- ধারণক্ষমতা: ৩০ জন
- সুযোগ-সুবিধা: এয়ার কন্ডিশনার যুক্ত কেবিন, আরামদায়ক বিছানা, সংযুক্ত বাথরুম, রেস্তোরাঁ মানের খাবার, বারবিকিউ এর ব্যবস্থা, ওয়াই-ফাই, ছাদের উন্মুক্ত ডেক যেখানে বসে হাওরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।
- অন্যান্য: জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট, ফার্স্ট এইড বক্স, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ইত্যাদি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

২. MV স্বর্ণদ্বীপ:
- ধারণক্ষমতা: ২০ জন
- সুযোগ-সুবিধা: এয়ার কন্ডিশন করা কেবিন, আধুনিক বাথরুম, সুস্বাদু খাবার, ছোট ডেক যেখানে বসে আড্ডা দেওয়া যায়।
- অন্যান্য: নিরাপত্তার জন্য জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম উপলব্ধ।
৩. MV মেঘবালিকা:
- ধারণক্ষমতা: ১০ জন
- সুযোগ-সুবিধা: আরামদায়ক কেবিন, সংযুক্ত বাথরুম, সুস্বাদু বাঙালি খাবার
- অন্যান্য: নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
৪. MV সবুজ দ্বীপ:
- ধারণক্ষমতা: ১৫ জন
- সুযোগ-সুবিধা: এয়ার কন্ডিশন করা কেবিন, আধুনিক বাথরুম, সুস্বাদু খাবার, ছোট লাইব্রেরি ও গেমস কর্নার।
- অন্যান্য: নিরাপত্তা এবং আরামের জন্য সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
৫. MV নীল আকাশ:
- ধারণক্ষমতা: ২৫ জন
- সুযোগ-সুবিধা: বিলাসবহুল কেবিন, সংযুক্ত বাথরুম, রেস্তোরাঁ মানের খাবার, বারবিকিউ এর ব্যবস্থা, ছাদের উন্মুক্ত ডেক যেখানে বসে হাওরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।
- অন্যান্য: নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা হয়েছে
টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট ভাড়া ২০২৫
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের জন্য হাউসবোট একটি জনপ্রিয় বিকল্প। হাউসবোটে থাকার সুযোগ-সুবিধা অনেক। আপনি আপনার পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে একসাথে একটি হাউসবোট ভাড়া করে হাওর ভ্রমণ করতে পারেন।

হাউসবোটে সাধারণত এয়ার কন্ডিশনার, বিছানা, টয়লেট, বাথরুম ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা থাকে। অনেক হাউসবোটে খাবারের ব্যবস্থা ও থাকে। আপনি চাইলে নিজের পছন্দ মতো খাবার বানিয়ে খেতে পারবেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট ভাড়া নির্ভর করে নৌকার আকার, ধারণক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধা এবং মৌসুম এর উপর। ছোট হাউসবোট (১০-১৫ জন) ভাড়া করতে প্রতি রাতের জন্য ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। মাঝারি হাউসবোট (২০-২৫ জন) ভাড়া করতে ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। আর বড় হাউসবোট (৩০-৪০ জন) ভাড়া করতে ১২,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
টাঙ্গুয়ার হাওর নৌকা ভাড়া ২০২৫
হাউসবোটের বিকল্প হিসেবে আপনি নৌকা ভাড়া করেও টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করতে পারেন। নৌকা ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম খরচের। নৌকার আকার এবং ধারণক্ষমতা অনুসারে ভাড়া পরিবর্তিত হয়।ভাড়া ফিক্সড নয়।
ছোট নৌকা (৫-১০ জন) ভাড়া করতে প্রতি দিনের জন্য ২,০০০ থেকে ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। মাঝারি নৌকা (১০-১৫ জন) ভাড়া করতে ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। আর বড় নৌকা (১৫-২০ জন) ভাড়া করতে ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
টাঙ্গুয়ার হাওরের ভ্রমণের সেরা ১০ টি স্থান
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে আসলে অবশ্যই দেখে যাবেন টাঙ্গুয়ার হাওরের দর্শনীয় স্থান গুলো। নীলাদ্রি লেক (শহীদ সিরাজ লেক) হাওরের একটি প্রধান আকর্ষণ। এই লেকের নীল জল এবং চারপাশের সবুজ বন আপনাকে মুগ্ধ করবে। লাকমাছড়া গ্রাম এ আপনি গ্রামীণ বাংলার জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখতে পাবেন। বারিক্কা টিলা থেকে হাওরের এক অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। বসন্তকালে শিমুল বাগান লাল শিমুল ফুলে ভরে যায়। হাওরের উপর থেকে সুন্দর দৃশ্য দেখার জন্য ওয়াচ টাওয়ার একটি ভালো জায়গা। যাদুকাটা নদী দিয়ে নৌকা ভ্রমণ করতে পারেন। লাউড়ের গড় একটি ঐতিহাসিক স্থান। বাইক্কা বিল এ অনেক প্রজাতির পাখি দেখা যায়। হাওর থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। নিচে টাঙ্গুয়ার হাওড়ের দর্শনীয় স্থানগুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো
নীলাদ্রি লেক (শহীদ সিরাজ লেক): হাওরের বুকে নীল জলরাশির মাঝে অবস্থিত এই লেকটি প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয়ভাবে এটি শহীদ সিরাজ লেক নামে পরিচিত। লেকের চারপাশে ঘন সবুজ বন এবং নানা প্রজাতির পাখির কলতান আপনাকে মুগ্ধ করবে। নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে আপনি এই লেকের সৌন্দর্য্য আরও কাছ থেকে অনুভব করতে পারবেন।
লাকমাছড়া: যদি গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখতে চান, তাহলে লাকমাছড়া আপনার জন্য একটি আদর্শ স্থান। এই ছোট্ট গ্রামটি হাওরের অন্তর্গত এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং খাবার আপনার ভ্রমণকে আরও সমৃদ্ধ করবে। গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলে আপনি অনেক নতুন জিনিস জানতে পারবেন এবং তাদের আতিথেয়তা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে।
বারিক্কা টিলা: টাঙ্গুয়ার হাওরের মাঝে একটি ছোট টিলা হল বারিক্কা টিলা। এই টিলা থেকে আপনি হাওরের এক অপূর্ব প্যানোরামিক দৃশ্য দেখতে পাবেন। বিশেষ করে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় এখানকার দৃশ্য অসাধারণ সুন্দর হয়। প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
শিমুল বাগান: বসন্তকালে যখন হাওরের চারপাশে শিমুল ফুল ফোটে, তখন সেই দৃশ্য অন্যরকম এক সৌন্দর্য্য তৈরি করে। শিমুল বাগান এই সময় লাল শিমুল ফুলে ভরে যায় এবং পরিবেশ কে রঙিন করে তোলে। প্রকৃতির এই রঙিন রূপ আপনার মন কে আনন্দে ভরে দেবে।
ওয়াচ টাওয়ার: টাঙ্গুয়ার হাওর এবং এর আশেপাশের অঞ্চলের এক প্যানোরামিক ভিউ দেখার জন্য ওয়াচ টাওয়ার একটি ভালো জায়গা। এখান থেকে আপনি হাওরের বিশাল জলরাশি, সবুজ মাঠ এবং গ্রামগুলো দেখতে পাবেন। এছাড়াও দূর থেকে মেঘালয়ের পাহাড়ের দৃশ্য ও দেখা যায়।
যাদুকাটা নদী: টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী হল যাদুকাটা নদী। এই নদী দিয়ে নৌকা ভ্রমণ করতে পারেন। নদীর দুই ধারে ঘন সবুজ বন এবং নানা প্রজাতির পাখি আপনার ভ্রমণকে আরও মনোরম করে তুলবে।
লাউড়ের গড়: ইতিহাস প্রেমীদের জন্য লাউড়ের গড় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য যা অতীতের কথা মনে করিয়ে দেয়। এখানে আপনি প্রাচীন কিছু স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবেন এবং ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখার সুযোগ পাবেন।
বাইক্কা বিল: পাখি প্রেমীদের জন্য বাইক্কা বিল একটি আদর্শ স্থান। এখানে অনেক প্রজাতির স্থানীয় এবং অতিথি পাখি দেখা যায়। বিশেষ করে শীতকালে এখানে অসংখ্য অতিথি পাখি আশ্রয় নেয়। পাখি দেখার জন্য এটি একটি উত্তম স্থান।
হাওরের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত: টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। সূর্য যখন ধীরে ধীরে জলের উপর থেকে উঠে আসে অথবা অস্ত যায়, তখন সেই দৃশ্য অতুলনীয়। প্রকৃতির এই অপরূপ রূপ আপনার মনে দীর্ঘদিন স্মৃতি হিসেবে থাকবে।
টাঙ্গুয়ার হাওর সংলগ্ন গ্রামগুলো: হাওরের আশেপাশের গ্রামগুলোতে আপনি স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি অনুভব করতে পারবেন। তাদের সাথে কথা বলে আপনি অনেক নতুন জিনিস জানতে পারবেন এবং গ্রামীণ বাংলার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
এই সব স্থান ছাড়াও টাঙ্গুয়ার হাওরে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। আপনার পছন্দ এবং সময় অনুযায়ী আপনি এই স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারেন এবং টাঙ্গুয়ার হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর সম্পর্কে কিছু রিভিউ
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করে যারা এসেছেন তারা এই স্থান সম্পর্কে বেশ ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, টাঙ্গুয়ার হাওর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যের এক অনন্য স্পট
অনেকে বলেছেন যে, হাউসবোটে থাকার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। হাউসবোট থেকে হাওরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা এবং রাতের বেলায় নক্ষত্র ভরা আকাশ দেখা একটি অন্যরকম অনুভূতি।
তবে কিছু পর্যটক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, পর্যটকদের অসচেতনতার কারণে হাওরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
লেখকের শেষ কথা
টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের এক অমূল্য সম্পদ। এর অপরূপ সৌন্দর্য্য, জীববৈচিত্র্য এবং ঐতিহ্য পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। আপনি যদি টাঙ্গুয়ার হাওরের দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখতে চান, তাহলে টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট ভাড়া অথবা টাঙ্গুয়ার হাওর নৌকা ভাড়া ২০২৫ এর মাধ্যমে একটি অবিস্মরণীয় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
হাউসবোটে আপনি সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ আরামে থাকতে পারবেন। অন্যদিকে, নৌকা আপনাকে হাওরের বিভিন্ন কোণে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ দেবে। আপনার পছন্দ এবং বাজেট অনুযায়ী আপনি ঘুরাঘুরি করে বেড়াতে পারেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের সেরা সময় কোনটি?
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের সেরা সময় হলো বর্ষাকাল (জুন থেকে সেপ্টেম্বর)। এই সময় হাওর পানিতে পরিপূর্ণ থাকে এবং এর সৌন্দর্য্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে।
টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট ভাড়া ২০২৫ সালে কত?
টাঙ্গুয়ার হাওর হাউসবোট ভাড়া নির্ভর করে নৌকার আকার, ধারণক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধা এবং মৌসুমের উপর। সাধারণত ছোট হাউসবোট (১০-১৫ জন) ভাড়া করতে প্রতি রাতের জন্য ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা, মাঝারি হাউসবোট (২০-২৫ জন) ভাড়া করতে ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা এবং বড় হাউসবোট (৩০-৪০ জন) ভাড়া করতে ১২,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে কি কি দর্শনীয় স্থান রয়েছে?
টাঙ্গুয়ার হাওরে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেমন: নীলাদ্রি লেক (শহীদ সিরাজ লেক), লাকমাছড়া গ্রাম, বারিক্কা টিলা, শিমুল বাগান, ওয়াচ টাওয়ার, যাদুকাটা নদী, লাউড়ের গড়, বাইক্কা বিল ইত্যাদি।
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের জন্য কি কি টিপস?
ভ্রমণের আগে টাঙ্গুয়ার হাওর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
হাউসবোট বা নৌকা ভাড়া করার আগে রিভিউ পড়ে দেখুন।
আপনার বাজেট এবং প্রয়োজন অনুসারে হাউসবোট বা নৌকা বাছাই করুন।
ভ্রমণের সময় পরিবেশ দূষণ না করে এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত না ঘটিয়ে ভ্রমণ করুন।
যেকোনো তথ্যের আপডেট সবার আগে জানার জন্য উত্তর বিডির সোসাল একাউন্টগুলো অনুসরণ করুন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জায়গাটা ঘুরেছি,বেশ ভালই লাগছে।আপনাদের আর্টিকেল টির মাধ্যমে আমি হাউসবোট ভাড়া করি
বেশ ধন্যবাদ আপনাকে।যেহেতু আপনি আমাদের দ্বারা উপকৃত হয়েছেন।এভাবে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনার উজ্জ্বল ও মঙ্গল কামনা করি