১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে আপডেট তথ্য।

By G. Kibria

Published on:

১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে আপডেট তথ্য।

এই লেখায় আমি ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এর আপডেট তথ্য আপনাকে দিব। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। ভ্রমণ, কাজ, বা পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ছাড়া চলে না। বাংলাদেশ সরকার তিন ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে: লাল মলাটের কূটনৈতিক পাসপোর্ট, নীল মলাটের দাপ্তরিক পাসপোর্ট, এবং সবুজ মলাটের সাধারণ পাসপোর্ট।

AFR Technology এর ভিডিও পাসপোর্ট সম্পর্কিত।

এর মধ্যে সাধারণ নাগরিকরা সাধারণত সবুজ মলাটের পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। এই পাসপোর্ট ৫ বছর বা ১০ বছর মেয়াদে এবং ৪৮ বা ৬৪ পৃষ্ঠার হতে পারে। এই আর্টিকেলে আমরা ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। এছাড়া, পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া, সময়, এবং সর্বশেষ ফি সম্পর্কে সহজ ভাষায় তথ্য দেওয়া হবে।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট বর্তমানে বিশ্বে ১১৯তম অবস্থানে রয়েছে। যদিও এটি বিশ্বের শক্তিশালী পাসপোর্টগুলোর মধ্যে নয়, তবুও এটি বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণের প্রধান দলিল। সাধারণ পাসপোর্ট সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, এবং এটি বিভিন্ন মেয়াদে এবং পৃষ্ঠা সংখ্যায় পাওয়া যায়। ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরির ফি এবং প্রক্রিয়া নিয়ে এই লেখায় আমরা বিস্তারিত জানব।

১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট প্রকার

১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট দুই ধরনের পৃষ্ঠায় পাওয়া যায় ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৬৪ পৃষ্ঠা। এছাড়া, পাসপোর্ট তৈরির সময়ের ওপর ভিত্তি করে তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে:

  1. সাধারণ পাসপোর্ট: ২১ কর্মদিবসের মধ্যে তৈরি হয়।
  2. জরুরি পাসপোর্ট: ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তৈরি হয়।
  3. অতি জরুরি পাসপোর্ট: ২ কর্মদিবসের মধ্যে তৈরি হয়।

প্রতিটি ক্যাটাগরির জন্য আলাদা ফি নির্ধারিত আছে। এই ফি পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং তৈরির সময়ের ওপর নির্ভর করে।

১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

২০২৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের পাসপোর্ট ফি নির্ধারিত হয়েছে নিম্নরূপ। এই ফি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আপডেট হতে পারে, তাই আবেদনের আগে সরকারি ওয়েবসাইট চেক করা উচিত। নিচে ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের ফি বিস্তারিত দেওয়া হলো। ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট তৈরির জন্য ফি নির্ধারিত হয়েছে নিচের মতো:

  • সাধারণ পাসপোর্ট (২১ দিন): ৫,৭৫০ টাকা
  • জরুরি পাসপোর্ট (১০ দিন): ৮,০৫০ টাকা
  • অতি জরুরি পাসপোর্ট (২ দিন): ১০,৩৫০ টাকা

এই ফি সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। যারা দ্রুত পাসপোর্ট পেতে চান, তাদের জন্য অতি জরুরি ক্যাটাগরি বেছে নেওয়া উপযুক্ত।

১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠা পাসপোর্ট ফি

৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট তৈরির ফি একটু বেশি। এটি তাদের জন্য উপযুক্ত যারা ঘন ঘন ভ্রমণ করেন এবং বেশি ভিসা স্ট্যাম্পের জন্য জায়গা প্রয়োজন। ফি নিম্নরূপ:-

  • সাধারণ পাসপোর্ট (২১ দিন): ৮,০৫০ টাকা
  • জরুরি পাসপোর্ট (১০ দিন): ১০,৩৫০ টাকা
  • অতি জরুরি পাসপোর্ট (২ দিন): ১৩,৮০০ টাকা

৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট তৈরির খরচ বেশি হলেও এটি দীর্ঘমেয়াদী ভ্রমণকারীদের জন্য সুবিধাজনক।

পাসপোর্ট তৈরির জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে-

  1. অনলাইনে আবেদন: বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে।
  2. ডকুমেন্ট জমা: জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, এবং প্রয়োজনীয় ছবি জমা দিতে হবে।
  3. ফি পরিশোধ: নির্ধারিত ফি ব্যাংক বা অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।
  4. বায়োমেট্রিক তথ্য: নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আঙুলের ছাপ ও ছবি দিতে হবে।
  5. পাসপোর্ট সংগ্রহ: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।

১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী। এটি তৈরির খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও, প্রতি ৫ বছর পর পাসপোর্ট নবায়নের ঝামেলা এড়ানো যায়। এছাড়া, ঘন ঘন ভ্রমণকারীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট বেশি সুবিধাজনক। যারা ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের পরিবর্তে ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে চান, তাদের জন্য ফি নিচে দেওয়া হলো।

  • ৪৮ পৃষ্ঠা সাধারণ: ৪,০২৫ টাকা
  • ৪৮ পৃষ্ঠা জরুরি: ৬,৩২৫ টাকা
  • ৪৮ পৃষ্ঠা অতি জরুরি: ৮,৬২৫ টাকা
  • ৬৪ পৃষ্ঠা সাধারণ: ৬,৩২৫ টাকা
  • ৬৪ পৃষ্ঠা জরুরি: ৮,৬২৫ টাকা
  • ৬৪ পৃষ্ঠা অতি জরুরি: ১২,০৭৫ টাকা

পাসপোর্ট তৈরির জন্য যা যা করবেন

  • আগে থেকে প্রস্তুতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগেই সংগ্রহ করুন।
  • সঠিক তথ্য: ফরম পূরণের সময় সঠিক তথ্য দিন, নয়তো আবেদন বাতিল হতে পারে।
  • সময় বেছে নিন: জরুরি প্রয়োজন না থাকলে সাধারণ ক্যাটাগরি বেছে নিন, এতে খরচ কম হবে।
  • অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: সর্বশেষ ফি এবং নিয়ম জানতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট দেখুন।

১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরির ফি ৫,৭৫০ টাকা থেকে ১৩,৮০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যা পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং তৈরির সময়ের ওপর নির্ভর করে। এই আর্টিকেলে আমরা পাসপোর্ট তৈরির খরচ, প্রক্রিয়া, এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজ ভাষায় তুলে ধরেছি। আশা করি, এই তথ্য আপনার পাসপোর্ট তৈরির পরিকল্পনায় সাহায্য করবে। যদি লেখাটি আপনার কাছে উপকারী মনে হয়, তাহলে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করুন।

যেকোনো তথ্যের আপডেট সবার আগে জানার জন্য উত্তর বিডির সোসাল একাউন্টগুলো অনুসরণ করুন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ফেসবুক পেজFollow Us
হোয়াটসএপJoin us
ইন্সটাগ্রামJoin us
মিডিয়ামJoin us

Leave a Comment