পরিবার হলো সমাজের সবচেয়ে ছোট অংশ। আমরা সবাই কোনো না কোনো পরিবারের সাথেই থাকি। সেই অনেক আগে থেকেই মানুষ পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে। কিন্তু পরিবার বলতে আসলে কী বোঝায়? পরিবার কাকে বলে, পরিবার কত প্রকার ও কি কি – এই সব প্রশ্নের সহজ উত্তর দেওয়ার জন্যই আজকের এই লেখা। এখানে পরিবারের মানে, ধরন, বৈশিষ্ট্য এবং আরও অনেক জরুরি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
সকল শ্রেণীর জন্য পরিবারের সংজ্ঞা
পরিবার হলো এমন একটা দল, যেখানে সবাই একসাথে থাকে, একে অন্যকে ভালোবাসে, আদর করে, আর বিপদে সাহায্য করে। এটা এমন একটা নিরাপদ জায়গা, যেখানে আমরা ভরসা পাই, শান্তি পাই। পরিবারের লোকেরা সাধারণত রক্তের সম্পর্ক, বিয়ের সম্পর্ক, বা দত্তক নেওয়ার মাধ্যমে একজন আরেকজনের সাথে জুড়ে থাকে। সহজে বললে, পরিবার হলো ভালোবাসার সম্পর্ক আর একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মাধ্যমে তৈরি হওয়া একটা দল।
পরিবারের সংজ্ঞা (Poribarer Songga) নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্ন মত দিয়েছেন। তবে, সাধারণভাবে, পরিবার বলতে বোঝায় এমন একটি গোষ্ঠী, যা রক্তের সম্পর্ক, বৈবাহিক সম্পর্ক, বা দত্তক গ্রহণের মাধ্যমে গঠিত হয় এবং যেখানে সদস্যরা একসাথে বসবাস করে। পরিবারের সদস্যরা একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল থাকে এবং একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে থাকে। পরিবার আমাদের সামাজিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়তা করে। পরিবারের গুরুত্ব (Poribarer Gurutwo) অপরিসীম। এটি আমাদের পরিচয়, নিরাপত্তা এবং ভালোবাসার প্রধান উৎস
পরিবার কাকে বলে class 4 এর সংজ্ঞা
(ক্লাস ৪ এর শিক্ষার্থীর জন্য সহজ ভাষায়)
ছোট্ট বন্ধুরা, পরিবার মানে হলো যেখানে তোমরা তোমাদের বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, বা নানা-নানীর সাথে থাকো। যেখানে তোমরা একসাথে খেলাধুলা করো, গল্প করো, খাও, সেটাই তোমাদের পরিবার। পরিবারে সবাই মিলেমিশে থাকে, একজন আরেকজনকে খুব ভালোবাসে, আদর করে, আর কেউ বিপদে পড়লে সাহায্য করে। পরিবার হলো খুব আপন জায়গা।
পরিবার কাকে বলে class 6 এর সংজ্ঞা
(ক্লাস ৬ এর শিক্ষার্থীর জন্য সহজ ভাষায়)
পরিবার হলো সমাজের সবচেয়ে ছোট অংশ, যেখানে লোকেরা একসাথে থাকে আর একে অপরের প্রতি দায়িত্ব পালন করে। পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সাথে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ থাকে, একে অপরকে সম্মান করে, আর সহযোগিতা করে। পরিবার শুধু রক্তের সম্পর্ক দিয়ে তৈরি হয় না, দত্তক নেওয়ার মাধ্যমেও পরিবার হতে পারে। পরিবার আমাদের জীবনে নিরাপত্তা দেয় আর মন ভালো রাখে। পরিবারের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের বেড়ে উঠতে এবং ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।
পরিবার কাকে বলে class 8 এর সংজ্ঞা
(ক্লাস ৮ এর শিক্ষার্থীর জন্য সহজ ভাষায়)
পরিবার হলো এমন একটা সামাজিক ব্যবস্থা, যেখানে মানুষজন একে অপরের সাথে সম্পর্কের বাঁধনে একসাথে থাকে। এই বাঁধন রক্তের সম্পর্ক, বিয়ের সম্পর্ক বা দত্তক নেওয়ার মাধ্যমে তৈরি হতে পারে। পরিবার সমাজের সবচেয়ে ছোট অংশ এবং এটা সমাজের উন্নতি আর স্থির থাকার জন্য খুব দরকারি। পরিবারের লোকেরা একে অপরের প্রতি দায়বদ্ধ থাকে, একে অপরের সুখে-দুঃখে পাশে থাকে। পরিবার আমাদের সামাজিক, মানসিক আর অর্থনৈতিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। পরিবারের সদস্যদের সম্পর্ক ভালো থাকলে পরিবারের সবাই শান্তিতে থাকতে পারে।
পরিবার কত প্রকার ও কি কি?
পরিবারকে নানা দিক দিয়ে নানান ভাবে ভাগ করা যায়।পরিবারের প্রকারভেদ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:
সদস্য সংখ্যার দিক থেকে:
- একক পরিবার (Nuclear Family): এখানে শুধু বাবা-মা আর তাদের বিয়ে হয়নি এমন ছেলেমেয়েরা থাকে।
- যৌথ পরিবার (Joint Family): এখানে অনেক প্রজন্মের মানুষ (যেমন: দাদা-দাদী, বাবা-মা, চাচা-চাচী, তাদের ছেলেমেয়ে) একসাথে থাকে।
- সম্প্রসারিত পরিবার (Extended Family): এটা অনেকটা যৌথ পরিবারের মতোই, কিন্তু এখানে আরও দূরের আত্মীয়রাও একসাথে থাকতে পারে।
কে প্রধান, তার উপর ভিত্তি করে:
- পিতৃতান্ত্রিক পরিবার (Patriarchal Family): যেখানে বাবা বা বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ মানুষটি প্রধান।
- মাতৃতান্ত্রিক পরিবার (Matriarchal Family): যেখানে মা বা বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক মহিলা প্রধান।
বংশের পরিচয় কীভাবে ঠিক হয়, তার ভিত্তিতে:
- পিতৃসূত্রীয় পরিবার: যেখানে বাবার দিক থেকে বংশের পরিচয় ঠিক হয়।
- মাতৃসূত্রীয় পরিবার: যেখানে মায়ের দিক থেকে বংশের পরিচয় ঠিক হয়।
বিয়ের ধরন অনুযায়ী:
- একবিবাহভিত্তিক পরিবার: একজন পুরুষ ও একজন মহিলার মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে যে পরিবার তৈরি হয়।
- বহুবিবাহভিত্তিক পরিবার: একজন পুরুষ একাধিক মহিলাকে অথবা একজন মহিলা একাধিক পুরুষকে বিয়ে করে যে পরিবার গঠন করে।
অন্যান্য:
- সৎ পরিবার: যেখানে স্বামী বা স্ত্রীর আগের সংসারের ছেলেমেয়েরা একসাথে থাকে।
- দত্তক পরিবার: যেখানে কোনো বাচ্চাকে দত্তক নিয়ে পরিবার তৈরি করা হয়।
- অভিভাবক পরিবার: যেখানে বাবা-মা না থাকলে অন্য কেউ বাচ্চাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে তাদের বড় করে।
- অবিবাহিত পরিবার: যেখানে বিয়ে ছাড়াই একজন পুরুষ ও একজন মহিলা একসাথে থাকে এবং সন্তান জন্ম দেয়।
- অস্থায়ী পরিবার: কোনো বিশেষ কারণে কিছু সময়ের জন্য কয়েকজন মানুষ একসাথে থাকলে তাকে অস্থায়ী পরিবার বলা হয়।
পরিবার ও সমাজ একে অপরের সাথে জড়িত। পরিবার সমাজের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পরিবারের ১০ টি বৈশিষ্ট্য:
পরিবারের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- সব জায়গায় আছে: পরিবার সব সমাজেই দেখা যায়। এটা মানুষের জীবনের খুব দরকারি একটা অংশ।
- ভালোবাসার জায়গা: পরিবার হলো মায়া, মমতা, স্নেহ, ভালোবাসার কেন্দ্র।
- সমাজের ছোট অংশ: পরিবার হলো সমাজের সবচেয়ে ছোট আর গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
- দায়িত্ব: পরিবারের সবার একে অপরের প্রতি দায়িত্ব আছে।
- টাকার ব্যাপারে সাহায্য: পরিবারের লোকেরা একে অপরের টাকার প্রয়োজনে সাহায্য করে।
- নিরাপত্তা: পরিবার সবাইকে শারীরিক আর মানসিক নিরাপত্তা দেয়।
- বংশ রক্ষা: পরিবার বংশ পরম্পরাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
- সামাজিক শিক্ষা: পরিবার ছোটদের সমাজের নিয়মকানুন আর ভালো ব্যবহার শেখায়।
- স্থায়ী: পরিবার সহজে ভাঙে না, এটা একটা স্থায়ী সম্পর্ক।
- মিলেমিশে কাজ: পরিবারের সবাই মিলেমিশে বাড়ির কাজ করে।
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো রাখাটা খুব জরুরি। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো থাকলে জীবনযাপন সহজ হয়।
যৌথ পরিবার কাকে বলে?
যেখানে দাদা-দাদী, বাবা-মা, চাচা-চাচী, তাদের ছেলেমেয়ে, মানে অনেক প্রজন্মের লোকেরা একসাথে, একই ছাদের নিচে থাকে, তাকে যৌথ পরিবার বলে। যৌথ পরিবারে সাধারণত বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক মানুষটাই পরিবারের প্রধান হিসেবে সবকিছুর দেখাশোনা করেন। যৌথ পরিবারে সবাই একসাথে থাকার কারণে একে অপরের প্রতি মায়া-মমতা ও দায়িত্ববোধ বেড়ে যায়।
যৌথ পরিবারের 10 টি বৈশিষ্ট্য
- বড় পরিবার: যৌথ পরিবারে অনেক মানুষ থাকে।
- একসাথে থাকা: সবাই একই বাড়িতে থাকে।
- একই রান্নাঘর: সবার জন্য একই রান্নাঘরে রান্না হয়।
- সম্পত্তি সবার: পরিবারের সম্পত্তির উপর সবার সমান অধিকার থাকে।
- প্রধান একজন: বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি সাধারণত পরিবারের প্রধান হন।
- মিলেমিশে কাজ: সবাই একে অপরের কাজে সাহায্য করে।
- দায়িত্ব ভাগ করা: পরিবারের লোকেদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়।
- নিরাপত্তা: যৌথ পরিবারে সবাই মিলেমিশে থাকার কারণে নিরাপত্তা বেশি থাকে।
- রীতিনীতি মেনে চলা: যৌথ পরিবারে পুরনো দিনের রীতিনীতি ও সংস্কৃতি মেনে চলা সহজ হয়।
- বাচ্চাদের ভালো থাকা: বাচ্চারা সুন্দর পরিবেশে বড় হতে পারে।
একক পরিবার কাকে বলে?
একক পরিবার হলো এমন একটা পরিবার, যেখানে শুধু স্বামী-স্ত্রী আর তাদের বিয়ে হয়নি এমন ছেলেমেয়েরা থাকে। এই ধরনের পরিবারে সাধারণত মানুষজন কম থাকে। একক পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করলে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সাধারণত ভালো থাকে।
একক পরিবারের 10 টি বৈশিষ্ট্য
- ছোট পরিবার: একক পরিবারে মানুষ কম থাকে।
- স্বাধীনভাবে থাকা: একক পরিবারের লোকেরা নিজের মতো করে চলতে পারে।
- সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা: কোনো কিছু ঠিক করতে গেলে সহজে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
- নিজের মতো থাকা: নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলো গোপন রাখা যায়।
- টাকা-পয়সার দিক দিয়ে ভালো থাকা: অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে।
- কম দায়িত্ব:** দায়িত্ব তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
- সহজ জীবন: জীবনযাপন করা সহজ হয়।
- তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত: যেকোনো ব্যাপারে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
- ঝগড়া কম: পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া কম হয়।
- বেড়াতে যাওয়ার সুবিধা: সহজে কোথাও ঘুরতে যাওয়া যায়

একক পরিবার ও যৌথ পরিবারের 10 টি পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য | একক পরিবার | যৌথ পরিবার |
---|---|---|
মানুষ কয়জন | কম (স্বামী-স্ত্রী ও অবিবাহিত ছেলেমেয়ে) | বেশি (অনেক প্রজন্মের লোকেরা একসাথে থাকে) |
কতটুকু জায়গা | ছোট | বড় |
কে প্রধান | স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে অথবা একজন | বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি |
সিদ্ধান্ত নেওয়া | সহজ আর তাড়াতাড়ি | একটু কঠিন আর সময় বেশি লাগে |
টাকা পয়সার অবস্থা | সাধারণত ভালো থাকে | সবার সম্পত্তি একসাথে, খরচও বেশি হতে পারে |
নিজের মতো থাকা | অনেক বেশি | একটু কম |
দায়িত্ব | কম | বেশি |
নিরাপত্তা | কম | বেশি |
জীবন কেমন | সহজ | একটু কঠিন |
ঝগড়া | কম | বেশি হওয়ার সম্ভাবনা |
সম্প্রসারিত পরিবার কাকে বলে
সম্প্রসারিত পরিবার হলো যৌথ পরিবারের মতোই। তবে এখানে দূরের আত্মীয়-স্বজন, যেমন: মামা-মামী, খালা-খালু, ফুফা-ফুফু, তাদের ছেলেমেয়েরাও একসাথে থাকতে পারে। মানে, পরিবারের আকার আরও বড় হয়।
সৎ পরিবার কাকে বলে?
যখন স্বামী অথবা স্ত্রীর আগের বিয়ের সন্তান থাকে, আর তারা নতুন বিয়ে করার পর সবাই মিলে একসাথে থাকে, তখন সেই পরিবারকে সৎ পরিবার বলে। এখানে সবার মধ্যে ভালোবাসা ও বোঝাপড়া থাকাটা খুব জরুরি।
দত্তক পরিবার কাকে বলে?
যখন কোনো দম্পতি কোনো বাচ্চাকে নিজের সন্তান হিসেবে আইন অনুযায়ী গ্রহণ করে, আর তাকে নিজেদের সন্তানের মতো করে বড় করে, তখন সেই পরিবারকে দত্তক পরিবার বলে। দত্তক নেওয়া শিশুদের প্রতিপালনের মাধ্যমে পরিবার ব্যবস্থাপনা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায়।
অভিভাবক পরিবার কাকে বলে?
যেখানে বাবা-মা নেই, অথবা কোনো কারণে বাচ্চাদের সাথে থাকতে পারছেন না, তখন অন্য কোনো কাছের মানুষ (যেমন: দাদা-দাদী, নানা-নানী, চাচা-চাচী) যদি বাচ্চাদের অভিভাবক হয়ে তাদের দেখাশোনা করেন, তখন সেই পরিবারকে অভিভাবক পরিবার বলে।
অবিবাহিত পরিবার কাকে বলে?
যখন কোনো পুরুষ ও মহিলা বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকে এবং তাদের ছেলেমেয়ে হয়, সেই পরিবারকে অবিবাহিত পরিবার বলে।
অস্থায়ী পরিবার কাকে বলে?
যখন কোনো বিশেষ কারণে কিছু মানুষ কিছু সময়ের জন্য একসাথে থাকে, তখন তাকে অস্থায়ী পরিবার বলে। যেমন, কোনো ক্যাম্পে বা হোস্টেলে একসাথে থাকা।
পরিবার সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন উত্তর
একটি সুখী পরিবারের বৈশিষ্ট্য কী কী?
একটি সুখী পরিবারের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- একজন আরেকজনকে সম্মান করা আর ভালোবাসা: পরিবারের সবাই একে অপরকে ভালোবাসবে আর সম্মান করবে।
- কথা বলা: যেকোনো সমস্যা হলে সবাই মিলে আলোচনা করে সমাধান করা।
- সাহায্য করা: একজন আরেকজনের কাজে সাহায্য করা।
- একসাথে সময় কাটানো: সবাই মিলে একসাথে সময় কাটাবে, গল্প করবে, খেলাধুলা করবে।
- ভুল ক্ষমা করা: কেউ ভুল করলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া।
- ধন্যবাদ জানানো: একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।
- দায়িত্ব নেওয়া: সবাই নিজের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করা।
- পরিবারে মায়া-মমতা থাকলে ছোট বড় সবাই ভালো থাকে।
যৌথ পরিবারের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো কী?
সুবিধা:
- বাচ্চারা ভালোভাবে বড় হতে পারে।
- নিরাপত্তা পাওয়া যায়।
- টাকা-পয়সার দিক দিয়ে সুবিধা হয়।
- কাজের চাপ কম থাকে।
- একা লাগে না।
- ভালোবাসার বাঁধন শক্ত হয়।
অসুবিধা:
- নিজের মতো করে চলার স্বাধীনতা কম থাকে।
- সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ঝামেলা হতে পারে।
- ঝগড়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলো গোপন রাখা কঠিন হয়।
- টাকার চাপ বাড়তে পারে।
আধুনিক সমাজে পরিবার কাঠামোর পরিবর্তন কীভাবে হচ্ছে?
এখনকার দিনে পরিবারে (Poribar) অনেক বদল আসছে। যৌথ পরিবার কমে যাচ্ছে, আর একক পরিবার বেড়ে যাচ্ছে। মেয়েরা এখন আগের চেয়ে বেশি পড়াশোনা করছে, চাকরি করছে, তাই পরিবারে তাদের ভূমিকাও বদলে যাচ্ছে। এছাড়া, বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও বাড়ছে, আর একজন অভিভাবক আছেন এমন পরিবারের সংখ্যাও বাড়ছে। পরিবারের ঐতিহ্য রক্ষা করা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পারিবারিক মূল্যবোধ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
পারিবারিক মূল্যবোধ আমাদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। এই মূল্যবোধগুলো আমাদের মধ্যে সততা, ন্যায়বিচার, অন্যের প্রতি সহানুভূতি, সহযোগিতা, আর বড়দের সম্মান করার মতো গুণ তৈরি করে।
সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের দায়িত্ব কী?
সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের প্রধান কাজগুলো হলো:
- ঠিকভাবে দেখাশোনা করা: বাচ্চাদের খাবার, কাপড়, থাকার জায়গা, পড়াশোনা আর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
- স্নেহ-ভালোবাসা দেওয়া: বাচ্চাদের আদর-যত্ন করা আর তাদের মানসিক বিকাশে সাহায্য করা।
- ভালো শিক্ষা দেওয়া: বাচ্চাদের ভালো স্কুলে পাঠানো, যাতে তারা ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে।
- নৈতিক শিক্ষা দেওয়া: বাচ্চাদের ভালো-মন্দ, ঠিক-বেঠিক চিনতে শেখানো।
- নিরাপত্তা দেওয়া: বাচ্চাদের শারীরিক আর মানসিক নিরাপত্তা দেওয়া।
- সময় দেওয়া: বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো, তাদের কথা মন দিয়ে শোনা। সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করা একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবার গঠনের জন্য অপরিহার্য।
শেষ কথা
পরিবার আমাদের জীবনের খুব দরকারি একটা অংশ। পরিবার কাকে বলে,পরিবার কত প্রকার ও কি কি,পরিবারের সংজ্ঞা, ধরন, বৈশিষ্ট্য – যাই হোক না কেন, পরিবার আমাদের জীবনে শান্তি, নিরাপত্তা আর ভালোবাসা নিয়ে আসে। আমাদের সবার উচিত পরিবারের গুরুত্বটাএ বোঝা আর পরিবারের সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করা। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটা ছোট বড় সকলের জন্য কাজে লাগবে।আমাদের অন্যন্য ক্যাটাগরীর আর্টিকেল গুলো আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে পারে।
যেকোনো তথ্যের আপডেট সবার আগে জানার জন্য উত্তর বিডির সোসাল একাউন্টগুলো অনুসরণ করুন। ধন্যবাদ আপনাকে।