মানব সভ্যতা কাকে বলে ও মানব সভ্যতা বলতে কি বুঝায়

By G. Kibria

Published on:

মানব সভ্যতা কাকে বলে

মানব সভ্যতা কাকে বলে

সভ্যতা মানব ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত বিকাশের এক বিস্তৃত পর্যায়। এই আর্টিকেলে আমরা মানব সভ্যতা কী, কীভাবে এর উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে, এবং এর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

মনীষীদের মতে মানব সভ্যতার সংজ্ঞা

বিভিন্ন মনীষী মানব সভ্যতাকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তাদের সংজ্ঞাগুলো থেকে সভ্যতার মূল ধারণাগুলো স্পষ্ট হয়:

  • মর্গান: “সমাজবদ্ধ মানুষের জীবনযাত্রার প্রণালীই হলো সভ্যতা।” (Morgan: “Civilization is the way of life of a society.”)
  • টয়েনবি: “সভ্যতা হলো একটি জটিল সামাজিক প্রক্রিয়া, যা কতগুলো মূল্যবোধ, বিশ্বাস, এবং প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত।” (Toynbee: “Civilization is a complex social process, consisting of a set of values, beliefs, and institutions.”)
  • ম্যাকাইভার: “সভ্যতা হলো মানুষের সৃষ্ট এমন এক পরিবেশ, যা তার জীবনযাত্রাকে উন্নত করে এবং তাকে প্রকৃতির ওপর আধিপত্য বিস্তারে সাহায্য করে।” (MacIver: “Civilization is the environment created by man, which improves his way of life and helps him to dominate nature.”)
  • অগবার্ন ও নিমকফ: “সভ্যতা হলো মানুষের জীবনযাত্রার প্রণালী যা সমাজের সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি করে।” (Ogburn and Nimkoff: “Civilization is the way of life of human beings that increases cooperation and empathy among the members of society.”)

এই সংজ্ঞাগুলো থেকে বোঝা যায়, সভ্যতা কেবল বস্তুগত উন্নয়ন নয়, বরং এটি মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আত্মিক বিকাশের সম্মিলিত রূপ।

মানব সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ কোনটি?

মানব সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো সংস্কৃতি (Culture)। সংস্কৃতি এবং সভ্যতা একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সংস্কৃতি হলো মানুষের বিশ্বাস, আচার-আচরণ, শিল্পকলা, সাহিত্য, সংগীত, ধর্ম, এবং জীবনযাত্রার প্রণালী। সভ্যতা হলো সংস্কৃতির বাহ্যিক প্রকাশ, যা ভৌত অবকাঠামো, প্রযুক্তি, এবং সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সংস্কৃতি হলো ভেতরের জিনিস, আর সভ্যতা হলো বাইরের জিনিস। একটি ছাড়া অন্যটি অসম্পূর্ণ।

মানব সভ্যতা শুরু হয় কিভাবে?

মানব সভ্যতার শুরু সুদূর অতীতে। এটি কোনো একক ঘটনা নয়, বরং একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর শুরুটা ঠিক কোথায় এবং কখন, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ চিহ্নিত করা যায়:

  1. কৃষির উদ্ভাবন (Neolithic Revolution): প্রায় ১০,০০০ বছর আগে, মানুষ যখন শিকার ও সংগ্রহ ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করে, তখন স্থায়ী বসতি স্থাপন শুরু হয়। এটাই সভ্যতার প্রথম ধাপ।
  2. গ্রাম ও শহরের উদ্ভব: কৃষিকাজের ফলে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হয়, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং গ্রাম ও শহর গঠনের পথ সুগম করে।
  3. শ্রম বিভাজন: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে শ্রম বিভাজন দেখা দেয়। কেউ কৃষিকাজ করে, কেউ কারিগরি কাজ করে, কেউ ব্যবসা করে, আবার কেউ শাসন করে।
  4. সামাজিক সংগঠনের উদ্ভব: শ্রম বিভাজনের ফলে সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি ও গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়। এদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য তৈরি হয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
  5. রাষ্ট্রের উদ্ভব: গ্রাম ও শহরগুলো একত্রিত হয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক একক গঠন করে, যাকে আমরা রাষ্ট্র বলি। রাষ্ট্রের উদ্ভবের সাথে সাথে আইন, শাসনব্যবস্থা, এবং সেনাবাহিনীর মতো প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়।

মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ

মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশকে কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়:

  1. প্রস্তর যুগ (Stone Age):
    • প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Paleolithic Era): এই সময়ে মানুষ পাথরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত এবং শিকার ও সংগ্রহের মাধ্যমে জীবন ধারণ করত।
    • মধ্য প্রস্তর যুগ (Mesolithic Era): এই যুগে মানুষ ছোট আকারের পাথরের হাতিয়ার তৈরি করতে শেখে এবং শিকার ও সংগ্রহের পাশাপাশি মাছ ধরা শুরু করে।
    • নব্য প্রস্তর যুগ (Neolithic Era): এই সময়ে মানুষ কৃষিকাজ আবিষ্কার করে এবং স্থায়ী বসতি স্থাপন শুরু করে।
  2. তাম্র-প্রস্তর যুগ (Chalcolithic Era): এই যুগে মানুষ পাথরের পাশাপাশি তামার ব্যবহার শুরু করে।
  3. ব্রোঞ্জ যুগ (Bronze Age): এই সময়ে মানুষ তামা ও টিন মিশিয়ে ব্রোঞ্জ নামক একটি নতুন ধাতু তৈরি করতে শেখে, যা কৃষি ও যুদ্ধবিগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  4. লৌহ যুগ (Iron Age): এই যুগে মানুষ লোহার ব্যবহার শুরু করে, যা আরও শক্তিশালী হাতিয়ার ও অস্ত্রশস্ত্র তৈরিতে সাহায্য করে।
  5. প্রাচীন যুগ (Ancient Era): এই সময়ে মিশরীয়, মেসোপটেমীয়, সিন্ধু, চৈনিক, গ্রিক, এবং রোমান সভ্যতাগুলোর মতো বড় বড় সভ্যতা গড়ে ওঠে।
  6. মধ্যযুগ (Middle Ages): এই সময়ে ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটে এবং ইসলামি সভ্যতার স্বর্ণযুগের সূচনা হয়।
  7. আধুনিক যুগ (Modern Era): এই সময়ে ইউরোপে রেনেসাঁ, শিল্প বিপ্লব, এবং বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে, যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক পরিবর্তন আনে।
  8. বর্তমান যুগ: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির যুগ।

মানব সভ্যতার প্রথম বিপ্লব কি?

মানব সভ্যতার প্রথম বিপ্লব হলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিপ্লব (Neolithic Revolution) বা কৃষি বিপ্লব (Agricultural Revolution)। এই বিপ্লবের ফলেই মানুষ যাযাবর জীবন ত্যাগ করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে এবং কৃষিকাজকে জীবিকার প্রধান উৎস হিসেবে গ্রহণ করে। এর ফলে:

  • স্থায়ী বসতি: মানুষ এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে।
  • খাদ্য উৎপাদন: মানুষ নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপাদন করতে শেখে।
  • জনসংখ্যা বৃদ্ধি: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় জনসংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।
  • অতিরিক্ত উৎপাদন: প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন।
  • নতুন পেশাঃ কৃষিকাজ ছাড়াও মানুষ কাপড় বোনা, মৃৎশিল্প তৈরি সহ বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়।

মানব সভ্যতার দ্বিতীয় বিপ্লব কি?

মানব সভ্যতার দ্বিতীয় বিপ্লব হলো শিল্প বিপ্লব (Industrial Revolution)। এটি ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং ১৯শ শতাব্দীর প্রথম দিকে ঘটেছিল। এই বিপ্লবের ফলে:

  • কারখানা ব্যবস্থার উদ্ভব: হাতে তৈরি দ্রব্যের পরিবর্তে যন্ত্রের সাহায্যে কারখানায় ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয়।
  • নতুন শক্তির উৎস: কয়লা, বাষ্প, এবং বিদ্যুতের মতো নতুন শক্তির উৎস আবিষ্কৃত হয়।
  • যোগাযোগ ও পরিবহনের উন্নতি: বাষ্পীয় ইঞ্জিন, রেলপথ, এবং টেলিগ্রাফের মতো প্রযুক্তির উদ্ভাবন ঘটে।
  • শহুরে জীবন: মানুষ গ্রাম ছেড়ে কাজের খোঁজে শহরে চলে আসতে শুরু করে, যার ফলে বড় বড় শহর গড়ে ওঠে।
  • অর্থনৈতিক পরিবর্তন: শিল্প বিপ্লবের ফলে পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিকাশ ঘটে।

মানব সভ্যতায় মিশরীয়দের অবদান

মিশরীয় সভ্যতা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাদের অবদানগুলো হলো:

  • পিরামিড ও মন্দির নির্মাণ: বিশাল পিরামিড ও মন্দির নির্মাণ করে তারা স্থাপত্য ও প্রকৌশল বিদ্যায় নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দেয়।
  • হায়ারোগ্লিফিক লিপি: তারা হায়ারোগ্লিফিক নামক একটি চিত্রলিপি আবিষ্কার করে, যা প্রাচীন মিশরের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।
  • জ্যামিতি ও গণিত: তারা জ্যামিতি ও গণিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, যা জমি জরিপ ও পিরামিড নির্মাণে কাজে লাগত।
  • চিকিৎসাবিদ্যা: তারা চিকিৎসাবিদ্যায়, বিশেষ করে শল্যচিকিৎসায়, উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে।
  • নৌবিদ্যা: তারা নীলনদের ওপর নৌকা চালানোর জন্য দক্ষ ছিল এবং নৌবাণিজ্যেও পারদর্শিতা অর্জন করে।
  • সৌর ক্যালেন্ডার: পৃথিবীর প্রাচীনতম সৌর ক্যালেন্ডার তৈরীর কৃতিত্ব তাদের।

মানব সভ্যতার আদি সংগঠন কোনটি?

মানব সভ্যতার আদি সংগঠন হলো পরিবার (Family)। পরিবার হলো সমাজের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এবং মৌলিক একক। পরিবারের মাধ্যমেই মানুষ সামাজিক জীবন শুরু করে এবং সহযোগিতা, সহমর্মিতা, ও ভালোবাসার মতো গুণাবলি অর্জন করে। পরিবার থেকেই শিশুরা ভাষা, সংস্কৃতি, এবং সামাজিক রীতিনীতি শেখে।

মানব সভ্যতার ইতিহাস

মানব সভ্যতার ইতিহাস হাজার হাজার বছরের পুরনো। এটি উত্থান-পতন, সংঘাত-শান্তি, এবং আবিষ্কার-উদ্ভাবনের এক দীর্ঘ যাত্রা। এই ইতিহাস জুড়ে, বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে উঠেছে, বিকশিত হয়েছে, এবং কখনো কখনো বিলুপ্ত হয়েছে।

প্রাচীনকালের উল্লেখযোগ্য সভ্যতাগুলোর মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা, মেসোপটেমীয় সভ্যতা, সিন্ধু সভ্যতা, চৈনিক সভ্যতা, গ্রিক সভ্যতা, এবং রোমান সভ্যতা উল্লেখযোগ্য। এই সভ্যতাগুলো মানবজাতির জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, এবং দর্শনে অসামান্য অবদান রেখেছে।

মধ্যযুগে ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটে এবং এশিয়াতে ইসলামি সভ্যতার স্বর্ণযুগ দেখা যায়। এই সময়ে বিজ্ঞান, সাহিত্য, এবং দর্শনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়।

আধুনিক যুগে ইউরোপে রেনেসাঁ, শিল্প বিপ্লব, এবং বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের মতো ঘটনাগুলো ঘটে, যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মানুষ প্রকৃতিকে আরও ভালোভাবে বুঝতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে।

প্রাচীন উল্লেখযোগ্য সভ্যতাগুলো কি কি?

  • মেসোপটেমীয় সভ্যতা (Mesopotamian Civilization): টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
  • মিশরীয় সভ্যতা (Egyptian Civilization): নীলনদের তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা পিরামিড, মন্দির, এবং হায়ারোগ্লিফিক লিপির জন্য বিখ্যাত।
  • সিন্ধু সভ্যতা (Indus Valley Civilization): সিন্ধু নদের তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা উন্নত নগর পরিকল্পনা ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য পরিচিত।
  • চৈনিক সভ্যতা (Chinese Civilization): হোয়াংহো ও ইয়াংসি নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা কাগজ, বারুদ, এবং কম্পাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত।
  • গ্রিক সভ্যতা (Greek Civilization): এই সভ্যতা গণতন্ত্র, দর্শন, এবং অলিম্পিক গেমসের জন্য পরিচিত।
  • রোমান সভ্যতা (Roman Civilization): এই সভ্যতা আইন, প্রশাসন, এবং প্রকৌশল বিদ্যায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
  • মায়া সভ্যতা (Maya Civilization): মধ্য আমেরিকায় গড়ে ওঠা এই সভ্যতা জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, এবং ক্যালেন্ডারের জন্য বিখ্যাত।
  • ইনকা সভ্যতা (Inca Civilization): দক্ষিণ আমেরিকায় গড়ে ওঠা এই সভ্যতা বিশাল সাম্রাজ্য, সড়ক ব্যবস্থা, এবং স্থাপত্যের জন্য পরিচিত।

মানব সভ্যতার গুরুত্ব

মানব সভ্যতার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আমাদের পরিচয়, আমাদের ইতিহাস, এবং আমাদের ভবিষ্যতের পথনির্দেশক। সভ্যতার মাধ্যমেই:

  • জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটে: সভ্যতা মানুষকে জ্ঞান অর্জনে উৎসাহিত করে এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পথ সুগম করে।
  • শিল্পকলা ও সংস্কৃতির উন্নতি হয়: সভ্যতা শিল্পকলা, সাহিত্য, সংগীত, এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকাশে সহায়তা করে।
  • সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রগতি ঘটে: সভ্যতা সামাজিক সংগঠন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সাহায্য করে।
  • নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়: সভ্যতা মানুষকে ন্যায়বিচার, সততা, এবং সহানুভূতির মতো নৈতিক গুণাবলি অর্জনে উৎসাহিত করে।
  • প্রকৃতির ওপর নিয়ন্ত্রণ: মানুষ কীভাবে চাষাবাদ করতে শিখেছে, কীভাবে নদী নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছে, কীভাবে উড়োজাহাজ বানিয়েছে – সবই সভ্যতার অবদান।

মানব সভ্যতা নিয়ে লেখকের শেষ কথা

মানব সভ্যতা (Manob Sabhyata) হলো মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। এটি কোনো একক ব্যক্তির সৃষ্টি নয়, বরং হাজার হাজার বছর ধরে অসংখ্য মানুষের অবদান। [মানব সভ্যতা বলতে কি বুঝায়] এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, সভ্যতা হলো মানুষের জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, সংস্কৃতি, এবং সামাজিক সংগঠনের সমন্বিত রূপ, যা মানুষকে উন্নত জীবনযাপনের পথে পরিচালিত করে। আমাদের উচিত সভ্যতার সুফলগুলো উপভোগ করার পাশাপাশি এর প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া, এর অর্জনগুলো রক্ষা করা এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ পৃথিবী গড়ে তোলা।

সভ্যতা কাকে বলে?

সভ্যতা হলো মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, এবং প্রযুক্তিগত বিকাশের এমন একটি পর্যায়, যেখানে মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করে, কৃষিকাজ করে, নগর গড়ে তোলে, এবং জটিল সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলে।

সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে পার্থক্য কী?

সংস্কৃতি হলো মানুষের বিশ্বাস, আচার-আচরণ, শিল্পকলা, সাহিত্য, সংগীত, ধর্ম, এবং জীবনযাত্রার প্রণালী। আর সভ্যতা হলো সংস্কৃতির বাহ্যিক প্রকাশ, যা ভৌত অবকাঠামো, প্রযুক্তি, এবং সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।

মানব সভ্যতার কয়টি স্তর?

মানব সভ্যতার নির্দিষ্ট কোনো স্তর সংখ্যা নেই। প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং সমাজবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানদণ্ড অনুযায়ী একে ভাগ করেছেন। তবে সাধারণভাবে প্রস্তর যুগ, তাম্র-প্রস্তর যুগ, ব্রোঞ্জ যুগ, লৌহ যুগ, প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ, আধুনিক যুগ, এবং বর্তমান যুগ- এভাবে ভাগ করা যায়।

পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা কোনটি?

মেসোপটেমীয় সভ্যতাকে সাধারণত পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

মানব সভ্যতার ইতিহাসে কোন ঘটনাগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?

কৃষির উদ্ভাবন, লিখন পদ্ধতির আবিষ্কার, শিল্প বিপ্লব, এবং তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

যেকোনো তথ্যের আপডেট সবার আগে জানার জন্য উত্তর বিডির সোসাল একাউন্টগুলো অনুসরণ করুন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ফেসবুক পেজFollow Us
হোয়াটসএপJoin us
ইন্সটাগ্রামJoin us
মিডিয়ামJoin us

Leave a Comment